বাজরিগার পাখির ডিম পাড়ার লক্ষন | বাজরিগার পাখি পালন | Pakhi Palon | Pakhir Breeding
আজকে কথা বলব বাজিগর পাখির ডিম পাড়ার আগে যে লক্ষণ গুলো প্রকাশ করে তা নিয়ে। যাতে আপনি বুঝতে পারেন পাখির ডিম পাড়ার সময় হয়ে এসেছে কিনা। আমার পাখিগুলোর মধ্যে অলরেডি ডিম পাড়ার লক্ষণ প্রকাশ পেয়েছে। তাই আজকের ভিডিওতে আমি আপনাদের বাজরিগার পাখির ডিম পাড়ার পাঁচটি আলাদা আলাদা লক্ষণ শেয়ার করব।
সো আসুন শুরু করি
১, মিটিং করার 15 দিনের মধ্যে বাজরিগার পাখি ডিম পাড়ে । এসময় বেশ কিছু শারীরিক পরিবর্তন লক্ষণীয় হলেও সেটা খুব কম সময়ের জন্য হয়। কারণ পাখির শরীরে ডিম তৈরি হতে 30 থেকে 48 ঘণ্টা সময় লাগে। এজন্য শারীরিক পরিবর্তন ধরতে পারা টা একটু কঠিন। তবে বাজিগার ডিম পারবে কিনা এটা বুঝতে পারার বেশকিছু বাহ্যিক লক্ষণ রয়েছে। এর মধ্যে প্রথমটি হলো মা পাখি দিনের বেশিরভাগ সময় তার হাড়ির ভিতরে বসে থাকবে। একজন নতুন পাখি পালন কারীর কাছে যদিও পাখির শারীরিক পরিবর্তন বুঝতে পারাটা কঠিন কিন্তু বাহ্যিক পরিবর্তন বা আচার আচরণ এ পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। আমার এই সাদা মেয়ে পাখিটা এখন দিনের বেশিরভাগ সময় ওর হাড়ীর ভেতরে কাটাচ্ছে। যে টুকু বোঝা যাচ্ছে সে অল্প কিছুদিনেই ডিম পাড়া শুরু করবে। ডিম পাড়ার আগে আপনি দেখবেন মেয়ে পাখিটা শুধু শুধু হাড়ির মধ্যে কে বসে রয়েছে। সে মাঝে মাঝে এমন একটা ভঙ্গিমায় বসে থাকবে যেন ডিমে তা দিচ্ছে।
২, দ্বিতীয় লক্ষণটি হল পাখির মধ্যে আপনি নেস্টিং বিহেভিয়ার লক্ষ করবেন। মানে তারা পরখ করে দেখবে তাদের থাকার জায়গা টা বাচ্চা উৎপাদনের জন্য যোগ্য কিনা। এ সময় তারা তাদের হাঁড়ির মুখ কামরে কামড়ে বড় করার চেষ্টা করবে। মেয়ে পাখিটাকে আপনি মাঝেমাঝেই দেখবেন পুরো খাচাটা পরীক্ষা করে দেখছে। এছাড়া ডিম পাড়ার আগে দিয়ে মেয়ে পাখিগুলোর মধ্যে তার বাসা রক্ষার একটা প্রবণতা লক্ষ্য করা যাবে। এ পাখিটাকে লক্ষ্য করুন। সে তার খাঁচার আশপাশে কাউকে পছন্দ করছে না। সে ক্যামেরা দিয়ে ভিডিও করছি বলে আমাকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। খাঁচার থেকে মুখ বের করে করে এবং শরীর ফুলিয়ে সে আমাকে সরে যাওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। সাধারণ সময় হলে বা পাখির ভয় পেলে খাঁচার এক কর্নারে গিয়ে লুকিয়ে থাকে। কিন্তু ডিম বাচ্চা করার আগ দিয়ে সে তার বাসা রক্ষায় প্রবণতা প্রকাশ করে।
৩, ডিম পারার আরেকটি লক্ষণ প্রকাশ পায় পুরুষ পাখির আচরণে। এসময় ছেলে পাখিগুলো একটু অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ করে এবং খাতায় বসে থাকা মেয়ে পাখিটাকে মুখে তুলে খাইয়ে দেবে। মানে ছেলে পাখিটা নিচে নেমে খাবে আর সেই খাবার মুখে করে নিয়ে খাঁচায় বসে থাকা তার সঙ্গীকে খাইয়ে দেবে। আমার এই হলুদ ছেলে পাখিটাকে দেখুন সে মুখে করে খাবার নিয়ে এসে শাড়ির ভেতরে থাকা মেয়ে পাখিটাকে খাইয়ে দিচ্ছে। ডিম পাড়ার আগে থেকে শুরু করে ডিমে তা দেয় আর পুরো সময়কাল ছেলে পাখিগুলো মেয়ে পাখিটাকে মুখে তুলে খাইয়ে থাকবে। তাছাড়া বাবা হিসেবে ও পুরুষ বাজরিগার পাখিগুলোর বেশ সুনাম রয়েছে। এরা ডিম ফোটার পর থেকে বাচ্চাদের মুখে তুলে খাইয়ে প্রতিপালন করে। সো হাড়িতে বসে থাকা অবস্থায় যখন দেখবেন মেয়ে পাখিটাকে ছেলে পাখিটা খাইয়ে দিচ্ছে তখন বুঝতে পারবেন এটাও তার ডিম পাড়ার একটা লক্ষণ।
৪, পরবর্তী লক্ষণ টি হলো পাখির ক্যালসিয়াম গ্রহণ এবং মিনারেল ব্লক খাওয়ার মাত্রা বেড়ে যাবে। নরমালি যে পাখিগুলো মিনারেল ব্লক বা কেটেল ফিস বোন খেতে চাইত না তারাই ওটা খাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করবে। পেটে ডিম তৈরি হওয়ার সময় পাখির শরীরে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম এবং খনিজ উপকরণের প্রয়োজন হয় আর এজন্যই মেয়ে পাখিগুলো ডিম পাড়ার আর দিয়ে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ মিনারেল ব্লক বা কাটেল ফিস বোন তুলনামূলক বেশি পরিমাণে খাবে।
৫, কিছু পাখিকে আবার আপনি ডিম পাড়ার দিয়ে অল্পস্বল্প মোল্ডিং হতে দেখবেন। এসময় আবার কিছু পাখি তাদের শরীরের পালক তুলে হাড়ীর মধ্যে ফেলে রাখতে দেখা যায়। তবে এটা সব সময় হবে এরকম কোন কথা নেই। তবে মূল টিনের এই বিষয়টি সব সময় দেখা যায় না। কখনো কখনো ডিম পাড়া রাগ দিয়ে ওরা এমনটা করে থাকে।
যেদিন ডিম পাড়ার সময় হবে এবার যেদিন তারা ডিম পাড়া শুরু করবে সেদিন তারা সহজে হাড়ি থেকে আর বের হবে না। এ সময় আপনি চেষ্টা করবেন পাখি থেকে যত দূরে থাকা যায় ততটা দূরে থাকার। দিনে অল্প কিছুক্ষণ শুধু তাদের খাবার পানি ও শাক সবজি দিয়ে তাদেরকে প্রাইভেসি দিবেন। বেশি ডিস্টার্ব করা বা বারবার উঁকি ঝুঁকি পাড়া ঠিক নয়।